
সহীহ্ রেওয়াতে ও বিশ্বস্ত বর্ণনা মতে হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার স্বহস্তে লিখিত কোন কিতাব নেই | এ কথাটি ঐতিহাসিক সত্য | এ বিষয়ে আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি যে, মহান আল্লাহ পাক উনার জমিনে এমন কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করেনি যে প্রমাণ করতে পারবে যে, হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রচিত বা লিখিত কোন কিতাব রয়েছে; কিন্তু স্বার্থান্বেষী ও সংখ্যা লঘু জামায়াত রেযা খাঁনী গংরা নফসের তাড়নায় উদ্ভূদ্ধ হয়ে হযরত ইসমাঈল শহীদ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি রচিত “সিরাতুল মুস্তাকিম” কিতাবখানা অত্যন্ত কূটচালে উনার নামে চালিয়ে দিবার অপচেষ্টা চালাচ্ছে | রেজভীদের মতে উক্ত কিতাবের বিষয়বস্তু ও আপত্তিকর কথাবার্তা স্বয়ং হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিজের এবং এটাকে কিতাব আকারে রূপ দিয়েছেন হযরত মাওলানা ইসমাঈল শহীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি | কিন্তু হিন্দুস্থান ও বাংলাদেশের জমহুর বিখ্যাত ও নামজাদা আলেমগণের বক্তব্যনুযায়ী এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা যার ঐতিহাসিক কোন প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায় না |
শ্রদ্ধেয়, বরেণ্য, আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের এই বড় জামায়াতের বক্তব্য ও বর্ণনা থেকে বুঝা যায় ব্রিটিশ মদদপুষ্ট হিংসুক, বিরুদ্ধবাদী, রেযা খানী গংরা ষড়যন্ত্র করে মানুষের নিকট উনাকে হেয় প্রতিপন্ন করার মানসে উনাকে ওহাবী বলার সাথে সাথে উক্ত বহুল সমালোচিত “সিরাতুল মুস্তাকিম” কিতাবটিও উনার নামে জনসমাজে অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ভাবে ছড়িয়ে দিয়েছে | এই বড় জামায়াতের সাথে আমরাও সম্পূর্ণ একমত | আমাদের মতেও হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার স্বহস্তে লিখিত বা রচিত কোন কিতাব মহান আল্লাহ্ পাক উনার জমিনে নেই | এবং একথা কেউ দলীল-আদিল্লাহ ও সূত্রসহ প্রমাণও করতে পারবে না যে, এটি উনারই লিখিত কিতাব |
মূলতঃ এই কিতাবের লেখক হচ্ছেন, হযরত মাওলানা ইসমাঈল শহীদ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি |
আর হযরত ইসমাঈল শহীদ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি যদি উনার কিতাবে কিছু আপত্তিকর কথাবার্তা লিখে থাকেন তার জন্য উনি নিজেই দায়ী হবেন বা তার জবাবদিহী তিনিই করবেন | সেইজন্য হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে কোন প্রকারেই দায়ী বা দোষী সাব্যস্ত করা জায়েয নয় |
কারণ মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন, “এক জনের গুণাহের বোঝা অন্যজন বহন করবেনা |” অর্থাৎ একজনের জন্য অন্যজন দায়ী হবেনা | (সূরা আনআম/১৬৪)
এরপরও যদি হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দোষারোপ করা হয় তাহলে তা হবে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র কুরআন শরীফ-পবিত্র সুন্নাহ শরীফের খিলাফ | যা নাজায়েয ও হারাম |
আর যারা বলেন, “সিরাতুল মুস্তাকীম” কিতাব হচ্ছে, হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুখনিসৃত বাণী বা উনার বয়ান যা শুনে হযরত ইসমাঈল শহীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তা কিতাব আকারে রূপ দিয়েছেন তাহলে হযরত ইসমাঈল শহীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি কি করে দোষী সাব্যস্ত হবেন? আমাদের জবাব হলো, যে ব্যক্তি কোন মুহাক্কিক ওলী আল্লাহর বয়ান শুনে তা লিপিবদ্ধ করে কিতাবের আকারে রূপ দেয় উক্ত কিতাবের ভুল-ক্রটির জন্য সংকলকই দায়ী থাকে |
উল্লেখ্য যে, পবিত্র হাদীছ শরীফ সম্বলিত অনেক কিতাব রয়েছে যার মধ্যে মওজু মতরুক অর্থাৎ গায়ের সহীহ হাদীছ শরীফও রয়েছে | এখন প্রশ্ন হচ্ছে এ সমস্ত মওজু মতরুকও গায়ের সহীহ হাদীছ শরীফের জন্য কি স্বয়ং আল্লাহ পাক উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি দায়ী বা দোষী সাব্যস্ত হবেন? না এর সংকলক দায়ী ও দোষী সাব্যস্ত হবেন?
যদি সংকলক দায়ী ও দোষী বলে সাব্যস্ত হন তাহলে হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুখ নিসৃতবাণী সংকলন করার কারণে তার মধ্যস্থ ভুল-ক্রটির কারণে একইভাবে সংকলকই দায়ী বা দোষী বলে সাব্যস্ত হওয়ার কথা | তাহলে এ ব্যাপারে কি করে হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দোষারোপ করা যেতে পারে?
জানা আবশ্যক যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হস্ত মুবারকে বাইয়াত হয়ে কত নামধারী কপট মুনাফিক মুসলমান উনার সাথে যুদ্ধ-জিহাদ করেছে | উনার পিছনে মুক্তাদী সেজে সালাত (নামায) আদায় করেছে | সর্বক্ষণই তারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চারপাশে উনাকে ছায়ার মত ঘিরে থাকতো | অথচ এক সময় এরাই পবিত্র সহধর্মিনী আলাইহাস সালাম উনাদের উপর অর্থাৎ উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহাস সালামগণের উপর মিথ্যা তোহমত, অপবাদ দিয়ে গোটা নবী পরিবারে বিষের আগুণ লাগিয়ে দিতে রহমতুল্লীল আলামীনকে যারপর নাই তাকলীফ (কষ্ট) দিয়েছে |
তেমনি পূর্ববর্তী ইহুদী-নাসারাদের নবী-রসূল আলাইহিস সালামগণ যেমন হযরত মূসা আলাইহিস সালাম উনার উপর তাওরাত শরীফ, হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম উনার উপর যাবুর শরীফ, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার উপর ইনজিল শরীফ নাযিলকৃত আসমানী কিতাব যা-কিনা তাদের মন মত হয়নি | তাই তারা তাদের চাহিদানুযায়ী উক্ত পবিত্র আসমানী কিতাবগুলোর বিকৃতি ঘটিয়ে অর্থাৎ নিজেদের মনগড়া অভিমত উক্ত পবিত্র গ্রন্থে ঢুকিয়ে মূল আসমানী কিতাবগুলোর অস্তিত্বই নষ্ট করে ফেলেছে | এখন উক্ত চির পথভ্রষ্ট, গোমরাহ্ ইহুদী-নাসারাদের জন্য কি তাদের নবী-রসূল আলাইহিস সালামগণকে দোষারোপ করা হবে? (নাঊযুবিল্লাহি মিন যালিক)
হযরত আলী আলাইহিস সালাম ওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মুহব্বতের দাবীদার বহু শিয়া, রাফেজী, খারেজী উনার জীবিত অবস্থাতেই উনাকে তাদের ইমাম মানতো, এবং খুলাফায়ে রাশেদীনের প্রথম দু’খলীফাদের চেয়ে উনাকে শ্রেষ্ঠ মনে করত | যদিও বা হযরত আলী আলাইহিস সালাম ওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এটা একদমই পছন্দ করতেন না | এই খারেজী, রাফেজী, শিয়া সম্প্রদায় যারা হযরত আলী আলাইহিস সালাম ওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে সকলের চেয়ে অধিক মুহব্বত করতো বা করে থাকে তাদের ভ্রান্ত ও গোমরাহী আক্বীদার জন্য হযরত আলী আলাইহিস সালাম ওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে কি তাদের পথ প্রদর্শক বা আমীর ধরে নেয়া যাবে? (নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক)
তদ্রুপ হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উচ্চ কামালত বেলায়েতের দরজা হাছিল হওয়ার সংবাদ শুনে বহু খারেজী, ওহাবী, মুনাফিক, বিদয়াতী, লা-মাযহাবীর দল উনার হাতে হাত রেখেছে, এখন তাদের ভ্রান্ত ও বদ্ আক্বীদার জন্য তো আর তিনি দায়ী নন |
আর যদি প্রকৃত অর্থেই তাই হয় অর্থাৎ হযরত ইসমাঈল শহীদ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জন্য হযরত মুজাহিদে মিল্লাত হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় তবে কাবিলের জন্য হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে, কেনানের জন্য হযরত নূহ আলাইহিমুস সালাম উনাকে, আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইর জন্য আল্লাহ পাক উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং ইয়াজিদের ভুল-ক্রটির জন্য বিরূদ্ধবদীদের মতে হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু দোষি সাব্যস্ত হবেন |
নিরেট মূর্খ জাহেল, বিদয়াতী, গোমরাহ্, পথভ্রষ্ট সম্প্রদায় ব্যতীত কেউই এ ধরণের আক্বীদা ও চিন্তাভাবনা করবেনা কস্মিনকালেও |
উপরোক্ত বিস্তৃত ও তথ্যবহুল সমৃদ্ধ আলোচনা শেষে এই বিদয়াতী ফিরকাবন্দী রেজভী রেযা খাঁনি গংদের আমরা দ্ব্যর্থহীন ও বলিষ্ঠকন্ঠে বলতে চাই যদি তারা সত্যবাদী ও হক্বের অনুসন্ধানকারী হয়ে থাকে তবে তারা যেন মুজাহিদে মিল্লাত, ত্রয়োদশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, আমীরুল মু’মিনীন হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার স্বরচিত কিতাব থেকে লিখিত কোন আপত্তিকর বাক্য উদঘাটন করে দেখাক যা তার ওহাবী ও কাফির হওয়ার পরিচয় বহন করে | এবং হযরত ইসমাঈল শহীদ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রচিত “সিরাতুল মুস্তাকিম” কিতাবের বিভ্রান্তিমূলক বাক্যগুলো যে উনারই লিখা তা তারা প্রমাণ করুক | অন্যথায় পৃথিবী বিখ্যাত একজন আফজালুল ওলী, মুজাদ্দিদুযযামান উনার বিরুদ্ধে মিথ্যা তোহমত, কুফরী ফতওয়া বা অপবাদ দেয়ার কারণে উক্ত তোহমত বা কুফরী ফতওয়া তাদের উপরই বর্তাবে |
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে,
وعن ابى الدرداء قال سمعت رسمل الله صلى الله عليه وسلم يقول ان العبد اذا لعن شيءا صعدت اللعنة الى السماء فتغلق ابواب السماء دونها ثم تهبط الى الارض فتغلق ابوابها دونها ثم تأخذ يمينا ثمالا فاذا لم تجد مساغا رجعت الى الذى لعن فان كان لذلك اهلا والا رجعت الى قاءلها رواه ابو داود
অর্থঃ- “হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, যখন বান্দাহ কোন বস্তুকে বা কাউকে অভিসম্পাত করে, তখন সে অভিসম্পাত আকাশের দিকে উঠতে থাকে, তখন আকাশের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয় | অতঃপর ঐ অভিসম্পাত যমীনের দিকে প্রত্যাবর্তন করে | তখন যমীনের দরজাও বন্ধ করে দেয়া হয় | অতঃপর উহা ডান দিকে ও বাম দিকে যায় এবং সেখানেও যখন কোন রাস্তা না পায়, শেষ পর্যন্ত সেই ব্যক্তি বা বস্তুর দিকে প্রত্যাবর্তন করে যার প্রতি অভিসম্পাত করা হয়েছে | যদি সে অভিসম্পাতের উপযুক্ত হয় তবে তার উপরে আপতিত হয় | অন্যথায় (যদি সেই ব্যক্তি বা বস্তু অভিসম্পাতের উপযুক্ত না হয়) অভিসম্পাতকারীর দিকেই ফিরে আসে |” (পবিত্র আবূ দাউদ শরীফ)
কাজেই যারা হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বিনা প্রমাণে কাফির ফতওয়া দেয় বা দিবে তাদের স্বরণ রাখতে হবে যে, হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি কোন কুফরী না করার কারণে এই ফতওয়া তাদের উপরই বর্তাবে |
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, উক্ত কিতাবের যেসমস্ত আপত্তিকর বিভ্রান্তমূলক কথা-বার্তা পরিলক্ষিত হয় তা হচ্ছে মূলতঃ হিংসুক ও নিন্দুকের নিন্দার ফসল | অর্থাৎ ব্রিটিশ সরকার ও তাদের পদলেহী দালালেরা উক্ত কুফরীমূলক বাক্য হযরত ইসমাঈল শহীদ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “সিরাতুল মুস্তাকিম” কিতাবে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে | কারণ এই কিতাব ১২৩৩ হিজরীতে লিখিত হয়েছে আর প্রকাশ করা হয়েছে ১৩৩৪ হিজরীতে অর্থাৎ দীর্ঘ প্রায় ১০০ বছর পর প্রকাশিত হয়েছে, তখন অর্থাৎ যখন কিতাবখানা হযরত ইসমাঈল শহীদ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি লিখেন ঐ সময় হযরত শাহ্ আব্দুল আজীজ মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি জীবিত ছিলেন | যদি “সীরাতুল মুস্তাকীম” কিতাবে কুফরীমূলক আক্বীদা উল্লেখ থাকতো তাহলে হযরত শাহ আব্দুল আজীজ মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি অবশ্যই উনাকে সতর্ক করে শুধরিয়ে দিতেন |
আরো উল্লেখ্য যে, হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে যদি হযরত ইসমাঈল শহীদ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জন্য দোষারোপ করতে হয় তবে প্রথম দোষারোপ করতে হবে হযরত ইসমাঈল শহীদ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চাচা ও প্রথম পীর সাহেব “হযরত শাহ্ আব্দুল আজীজ মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে |” কারণ তিনি তার সোহবতে থেকে তা’লীম-তরবিয়ত পেয়ে ইলমে ফিক্বাহ্ ও ইলমে তাসাউফে পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়ে খিলাফত লাভ করেন |
উনার সম্পর্কে সিরাজুল হিন্দ, শাহ্ আব্দুল আজীজ মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এক মাকতুবে উনাকে হুজ্জাতুল ইসলাম (ইসলামের দলীল), তাজুল মুফাসসীরিন (মুফাসসীরগণের মাথার মুকুট), ফখরুল মুহাদ্দিসিন (হাদীছ শরীফ বিশারদগণের গৌরব) বলে উনার উচ্চ প্রশংসা করেন |”
পরবর্তীতে হযরত শাহ্ আব্দুল আজীজ মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নির্দেশে ইলমে তাসাউফে আরো তরক্কী হাছিলের জন্য হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেন |
আর যদি উক্ত কিতাবের বিভ্রান্তি ও আপত্তিকর কথা-বার্তাগুলো সত্যিই হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিজের হতো তবে মক্কা শরীফ, মদীনা শরীফ, মিশর, আফ্রিকা, আফগানিস্থান, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ বহু দেশের লক্ষ লক্ষ মুরীদ, শত শত হাজার হাজার আকাবিরে আলেম মুরীদগণ কি উনাকে এ ব্যাপারে সচেতন করাতেন না? বাংলা, ভারতসহ পবিত্র মক্কা শরীফ, পবিত্র মদীনা শরীফ ও মিশরের আলেমগণ যারা উনার নিকট মুরীদ হয়ে খেলাফত লাভের যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন তারা কি এ সমস্ত কথা মেনে নিয়েছিলেন? তারা কি এ সমস্ত আপত্তিকর ও বিভ্রান্তিমূলক বাক্য শ্রবণ করে উনার নিকট বাইয়াত হয়েছিলেন? না মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে উনার মর্যাদা মর্তবা ও উচ্চ বেলায়েতের দরজা হাছিল হবার সুসংবাদ শুনে উনার নিকট মুরীদ হয়েছিলেন? হযরত সাইয়্যিদ শহীদ আহমদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম ওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সিলসীলা থেকে ফয়েজপ্রাপ্ত হয়ে শুরু থেকে এ পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ গাউস, কুতুব, আবদাল, নুকাবা, নোজাবা ইত্যাদি হয়েছেন এমনকি গত শতকের মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদুয্ যামান হযরত আবু বকর সিদ্দীক ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহিও ওনার সিলসিলার অন্তর্ভূক্ত | তাহলে তাদের কথামত তিনি যদি কুফরী করে থাকেন, আর যে কুফরী করে সে কাফের হয় | তাহলে একজন কাফেরের সিলসীলা থেকে কি করে লক্ষ লক্ষ গাউস, কুতুব, আবদাল, ও মুজাদ্দিদের আবির্ভাব ঘটাতে পারে